এই তো সেদিনই প্রিয় বন্ধুকে বলছিলাম কেন ইদানিং কাজে আগ্রহ পাচ্ছি না। উত্তরে সে আমাকে অনেকটা থামিয়ে দিয়েই শুরু করলো নিজের সমস্যার কথা। মনে হলো, আমার সমস্যাটা যেন তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। মন খারাপ হলো, খানিকটা একাও লাগলো। এমন ব্যস্ত পৃথিবীতে কি সত্যিই আমাদের কথা সহমর্মী হৃদয় দিয়ে শোনার মতো কেউ আছে? এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ উপলব্ধি করলাম, আমরা সারাদিন অনেক কথাই বলি, অনেক কিছুই শুনি। কিন্তু ‘সহমর্মী’ হতে পারি না বলে হয়তো আমাদের সেই যোগাযোগটুকু বিফলে যায়। আমরা প্রিয় বন্ধুর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে পারি না, পরিবারের কারো বিষন্নতার সময়ে সঙ্গী হতে পারি না এই সহমর্মীতার অভাবেই তো!
তাই মনের বন্ধু’র হয়ে আজ লিখছি কীভাবে হবেন সহমর্মী শ্রোতা।
"আমরা অনেক সময় সামনে থাকা মানুষটির কথা থামিয়ে দিয়ে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যাই। এ অভ্যাসটিও একজন সহমর্মী শ্রোতা হবার পথে বাধা।"
কেউ যখন তার ব্যক্তিগত কোন সমস্যা কিংবা অনুভূতির কথা আপনাকে বলতে আসে, তার অর্থ হলো সেই মূহুর্তে তার কাছে আপনি নির্ভরযোগ্য একজন মানুষ। এই ভরসার জায়গাটা ধরে রাখতে প্রথমেই ধৈর্য্যের সাথে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন। আগেই কথা না বলে তাকে পুরোটা বলার সুযোগ দিন। শোনার পর আপনি জিজ্ঞেস করুন সে এখন কী করতে চায়, এবং আপনি কীভাবে তার পাশে থেকে তাকে সহযোগিতা করতে পারেন। এতে সমস্যা যতই গুরুতর হোক না কেন, তার ভীতি কিছুটা হলেও কমবে, সেই সাথে সাহস এবং আস্থার জায়গাও বৃদ্ধি পাবে।
সহমর্মী শ্রোতা হওয়ার ক্ষেত্রে সামনের মানুষটিকে প্রাধান্য দেয়া খুবই জরুরী। বারবার অন্যমনস্ক হওয়া, আপনার ব্যস্ততার কথা বলা তাকে নিজের কথা বলতে নিরুৎসাহিত করবে। আমরা অনেক সময় সামনে থাকা মানুষটির কথা থামিয়ে দিয়ে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যাই। এ অভ্যাসটিও একজন সহমর্মী শ্রোতা হবার পথে বাধা। আপনার কথার মাধ্যমে তাকে বোঝাতে হবে তার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। এই আশ্বাস জীবন সম্পর্কে তার ইতিবাচক ভাবনা ফিরিয়ে দেবে।
বক্তা যেহেতু বিশ্বাসের জায়গা থেকে তার কথাগুলো আপনার সাথে ভাগাভাগি করছে, তাই আপনারও দায়িত্ব হবে মুক্ত মনে, বিচারহীন ভাবে তার কথা শোনা এবং তাকেও তেমনটিই অনুভব করানো। তাকে আশ্বাস দিয়ে বলুন যে, তার অনুভূতিগুলো, কথাগুলো আপনার কাছে নিরাপদ। তার ব্যক্তিগত তথ্য যে অন্য কারও কাছে পৌঁছাবে না সে নিশ্চয়তা দেয়াও একজন সহমর্মী শ্রোতার দায়িত্ব।
একজন ভালো শ্রোতা কখনোই বক্তাকে নিয়ন্ত্রণ করেন না, তাকে ছোট বা অবহেলিত অনুভব করেন না। বরঙ সহানুভূতিশীল আচরণের মাধ্যমে তারা এমন একটি জায়গা তৈরি করেন, যেখানে প্রাণ খুলে নিজের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা বলা যায়। আমাদের রোজকায় ব্যস্ত জীবনে এমন সহমর্মী শ্রোতার উপস্থিতি ভীষণ প্রয়োজন!
এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।
মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।
📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা
যখনই ঘোষণা এলো ক্লাস শুরু হওয়ার, তখনই তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যেতে শুরু হলো। ভর্তি পরীক্ষার পর থেকে আর বই নিয়ে বসা হয়নি। তার উপর ...
রুমের কোণায় পড়ে থাকা চেয়ারটিতে কাপড়ের স্তুপ জমে জমে ছোটোখাটো একটা এভারেস্ট হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন একদম চলেই এসেছে, তবু এখনো ...
“আরাম করে বসি। ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করি। সমস্ত মনোযোগ নিয়ে আসি নাকের প্রতি। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নেই এবং ধীরে ধীরে ...
আমাদের মন কত-শত কারণেই না খারাপ হয়! প্রিয় বন্ধু্র সাথে ঝগড়া হলে, পছন্দের বইটি হারিয়ে গেলে, পরীক্ষায় খারাপ করলে আমরা বলি ‘মনটা খুব খারাপ’। কিন্তু মন খারাপ মানেই কি আমি বিষন্নতায় ...