প্রেমের সম্পর্ক: জীবন, বাস্তবতা ও ভালোবাসা

ইকবাল হোসেন আরমান

MENTAL HEALTH

একটি রোমান্টিক সম্পর্কে দুজন বুনতে থাকেন নানা স্বপ্ন। সঙ্গে ভালো থাকার ফিলোসফি। প্রেমের সম্পর্কের শুরুটা থাকে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের মতো। জীবনটা মনে হয় ভীষণ রকম রোমাঞ্চকর। অ্যাডভেঞ্চারপূর্ণ।

ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি, বেড়ে ওঠার ধরনে পার্থক্য, পারিবারিক প্রত্যাশা ও নানা ধরনের ভিন্নতার কারণে রোমান্টিক সম্পর্কে থাকা দুটো মানুষ আলাদা হতেই পারেন। এই ভিন্নতাগুলো পাশে রেখে জোয়ারের মতো সামনের দিকে এগোতে হয়। ব্যক্তিগত চাহিদা, প্রয়োজন এবং মূল্যবোধ সঙ্গে নিয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চেষ্টা করে দুজন মানুষ। কারো ক্ষেত্রে সম্পর্কে এগোনোর আগেই ভাটা পড়ে যায়। কারোর ক্ষেত্রে আবার এই ভাটাকে পাশে ফেলে বয়ে চলা জরুরি হয়ে পড়ে।

সম্পর্কের শুরুতে করণীয়

আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে যাত্রা শুরু করুন। ব্যক্তিগত ইচ্ছা ও মূল্যবোধগুলো নিয়ে নিজেরা আলোচনা করুন। সম্পর্ক ভালো অবস্থানে রাখতে সমঝোতার মাধ্যমে একজন অন্যজনকে সাহায্য করুন। নিজের সম্পর্কে আরও সচেতন হোন। কোন বিষয়ে আপনি ভালো অনুভব করেন, কিসে আপনি রেগে যান, কার কোন কথায় আপনি কষ্ট পান, কোন কোন সময় আপনি নিজেকে আলাদা করে ফেলেন? এই বিষয়গুলো নিজে জানলে, ম্যানেজ করা শিখে গেলে তখন আপনার নিয়ন্ত্রণ আপনার কাছে অনেক সহজ হবে। খোলাখুলি কথা বলে সম্পর্ক আরও কার্যকর করে তুলতে পারেন।

অনুভূতি প্রকাশ করুন

ভালো-মন্দ বিচার ছাড়াই নিজেদের মধ্যে জমে থাকা অনুভূতি, ভয় এবং প্রত্যাশাগুলো প্রকাশ করুন। নিজেদের কথা বলার জায়গাটা এমনভাবে তৈরি করে নিন, যেন একে অপরের সঙ্গে মিলে একটি নিরাপদ সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। সহানুভূতি সম্পর্কের দৃঢ়তা বাড়ায়। একজন আরেকজনকে জায়গা দিতে হবে, ছাড় দিতে হবে। কারণ এটা জীবনের আরেকটি নতুন যাত্রা। নতুন সম্পর্কের ছোট-ছোট বিষয়গুলো একে অপরের সাপোর্ট সিস্টেমে আরও সাহায্য করে।

নিজেদের প্রশংসা করুন

সাংস্কৃতিক বৈষম্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা তৈরি করে। একে অপরের সংস্কৃতির প্রশংসা এবং সম্মান করার ওপর জোর দেওয়া উচিত। সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারিবারিক প্রত্যাশা যথেষ্ট প্রভাব ফেলতে পারে। এখানে পারিবারিক চাপ এবং প্রত্যাশা সম্পর্কে সম্মানজনক, খোলামেলা কথোপকথন হতে পারে। সবচেয়ে বড় ভুলটা হলো—জীবনকে গণিতের খাতার মতো বানিয়ে ফেলা। ‘মনে হয়’, ‘ধরি’, ‘হতে পারে’, এ রকম নানা কিছু মাথায় এলে জটিলতা বাড়তে পারে। খোলামেলা আলোচনায় সবকিছু সহজ করে নিন।

যখন চ্যালেঞ্জগুলো কঠিন বলে মনে হয়, তখন পেশাদার কাউন্সেলরের সহায়তা নিতে পারেন। মনে রাখবেন, ঝড়-বৃষ্টি যতই আসুক, আপনাদের দুজনের হাতে ছাতা একটাই। যদি এক ছাতার নিচেই থাকতে চান, তাহলে ভূমিকা রাখতে হবে দুজনকেই।

ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this

BLOG

ক্লাস শুরু হওয়ার আগে কেন এত টেনশন?

যখনই ঘোষণা এলো ক্লাস শুরু হওয়ার, তখনই তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যেতে শুরু হলো। ভর্তি পরীক্ষার পর থেকে আর বই নিয়ে বসা হয়নি। তার উপর ...

BLOG

কেন আমরা কাজ ফেলে রাখি?

রুমের কোণায় পড়ে থাকা চেয়ারটিতে কাপড়ের স্তুপ জমে জমে ছোটোখাটো একটা এভারেস্ট হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন একদম চলেই এসেছে, তবু এখনো ...

BLOG

মেডিটেশন কি সত্যিই জরুরি?

“আরাম করে বসি। ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করি। সমস্ত মনোযোগ নিয়ে আসি নাকের প্রতি। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নেই এবং ধীরে ধীরে ...

BLOG

মন খারাপই কি ডিপ্রেশন?

আমাদের মন কত-শত কারণেই না খারাপ হয়! প্রিয় বন্ধু্র সাথে ঝগড়া হলে, পছন্দের বইটি হারিয়ে গেলে, পরীক্ষায় খারাপ করলে আমরা বলি ‘মনটা খুব খারাপ’। কিন্তু মন খারাপ মানেই কি আমি বিষন্নতায় ...