বয়ঃসন্ধিতে মানসিক বিকাশ

ইকবাল হোসেন আরমান

MENTAL HEALTH

বয়ঃসন্ধিকাল হলো বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময় বিভিন্ন ধরনের, যেমন শারীরিক, মানসিক এবং আবেগীয় পরিবর্তন ঘটে। কিশোর-কিশোরীদের জন্য এ সময়ে নানা রকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়া স্বাভাবিক। এই কারণে বয়ঃসন্ধিকালে মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামগ্রিক সুস্থতার ওপর প্রভাব পড়ে। এ সময়ে মতামত প্রকাশে অসুবিধা হয়। নিজের সঙ্গে নিজের এবং পৃথিবীর সম্পর্ক নিয়ে নানা ধরনের মিল-অমিলের দ্বন্দ্ব তৈরি হয়।

পরিবারের সাহায্য

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় পারিবারিক কলহ কিংবা পরিবেশগত নানা কারণে খোলামেলা কথা বলতে পারার সুযোগটা থাকে না। বয়ঃসন্ধিকালে আমি আমাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি, কিংবা পরিবার থেকে কীভাবে সহায়তা নিতে পারি, তা অনেকে ভাবে না। তখন তারা নিজের মধ্যে একটা নিজস্ব জগৎ তৈরি করে নেয়। এই জগতে একা ছুটতে গিয়ে অনেকে হোঁচট খায়, মানসিক বিকাশে আসে বাধা। তবে বাবা-মা বা পরিবারের অন্য সদস্যরা বয়ঃসন্ধিকালে সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারেন।

ইতিবাচক থাকা

শৈশব থেকে যৌবনে পা রাখার সময়টাতে শিশু-কিশোরদের প্রতি ইতিবাচক থাকতে হবে। তাদের কাজের স্বাধীনতারবোধ গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন সিদ্ধান্ত নেওয়া শেখে। অভিজ্ঞতা থেকে শেখা ও কাজের ক্ষেত্রে দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করতে হবে। এটি তাদের মধ্যে দায়িত্ববোধ ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করতে সহায়তা করে।

অনুভূতি বুঝতে পারা

পরিবারের সবার সক্রিয়ভাবে কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে স্বাভাবিক আলোচনা করতে হবে। কিশোর-কিশোরীদের বৈষম্যগুলো কমানোর ক্ষেত্রে শক্তির দিকগুলো এবং দুর্বলতা সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। তাহলেই বয়ঃসন্ধিকালে আপনার সন্তানকে আপনি ভালোভাবে বুঝতে পারবেন।

নিজের জন্য সময়

মানসিকভাবে সুস্থ জীবনধারা পুরো পরিবার ও সমাজের সামগ্রিক সুস্থতায় অবদান রাখে। এর মধ্যে রয়েছে সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্টের কৌশলগুলো চর্চা করা। এগুলো শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো রাখতে পারে।

কিশোর-কিশোরীদের একটি সহায়ক পরিবেশে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে, কিশোর-কিশোরীরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, সেগুলোর জন্য পেশাদার কাউন্সেলরের পরামর্শের প্রয়োজন হতে পারে। পেশাদার কাউন্সেলররা এ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিতে পারবেন।

পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রয়োজনের সময় পেশাদার পরামর্শ চাওয়া এই গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক পর্যায়ে কিশোর-কিশোরীদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে একটি দায়িত্বশীল এবং সক্রিয় পদক্ষেপ। এই সময়ে প্রত্যেক কিশোর-কিশোরী ও তাদের পরিবারের পাশে থাকতে পারে মনের বন্ধু।

ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this

BLOG

ক্লাস শুরু হওয়ার আগে কেন এত টেনশন?

যখনই ঘোষণা এলো ক্লাস শুরু হওয়ার, তখনই তার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা যেতে শুরু হলো। ভর্তি পরীক্ষার পর থেকে আর বই নিয়ে বসা হয়নি। তার উপর ...

BLOG

কেন আমরা কাজ ফেলে রাখি?

রুমের কোণায় পড়ে থাকা চেয়ারটিতে কাপড়ের স্তুপ জমে জমে ছোটোখাটো একটা এভারেস্ট হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন একদম চলেই এসেছে, তবু এখনো ...

BLOG

মেডিটেশন কি সত্যিই জরুরি?

“আরাম করে বসি। ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করি। সমস্ত মনোযোগ নিয়ে আসি নাকের প্রতি। নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নেই এবং ধীরে ধীরে ...

BLOG

মন খারাপই কি ডিপ্রেশন?

আমাদের মন কত-শত কারণেই না খারাপ হয়! প্রিয় বন্ধু্র সাথে ঝগড়া হলে, পছন্দের বইটি হারিয়ে গেলে, পরীক্ষায় খারাপ করলে আমরা বলি ‘মনটা খুব খারাপ’। কিন্তু মন খারাপ মানেই কি আমি বিষন্নতায় ...