Student packages and discounts ongoing!

“ ভাল্লাগে না, মন খারাপ ” এগুলো কি শুধুই অনুভূতি নাকি কোনো মানসিক রোগ?

সোনিয়া আক্তার পুষ্প

MENTAL HEALTH DEPRESSION ANXIETY STRESS

 

Source: Freepik

 

জানালার পর্দার ফাঁকে আলো আসছে, মুখরিত চারদিকে সবুজের সমারোহ, পাখির কিচিরমিচির, সূর্যের আলোতে ঝলমল চারদিক   এমন একটা দিনেও কারও কারও লাগতে পারে অন্ধকার। এত কিছুর মাঝে জীবনের আনন্দ যেন বিলীন, কোনো কিছুতেই মন টানে না, কোথাও নিজেকে খুঁজে পাই না, যেন এক অন্য আমি, কোনো কিছুই যেন আগের মতো ভাল্লাগে না। কোনো কিছু করতে ইচ্ছে করে না, খেতে ভালো লাগে না, কারও সঙ্গে কথা বলতে ভালো লাগে না, কোনো কিছুতে মনোযোগ দিতে পারি না, চিন্তার জটিলতায় ঘুমটা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে, মন খারাপের পাহাড় জমে চোখের সানগ্লাসটায় যেন চারদিক ধূসর রঙে রাঙানো। একজন ব্যক্তির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা নেতিবাচক অনুভূতির এই অভিজ্ঞতা বলে দেয় তিনি মানসিকভাবে বিষণ্নতায় ভুগছেন।

 

একজন মানুষের কোনো বিষয়ে প্রত্যাশা পূরণ না হলে মন খারাপ হওয়া, কাজে আগ্রহ কমে যাওয়া, ভালো না লাগা খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু যখনই রোগ হবে সেটা হবে একটু ভিন্ন। মনে রাখতে হবে টানা দুই সপ্তাহ থেকে তারও বেশি সময় মন খারাপ থাকা বা আগে যেসব কাজে আনন্দ লাগত সেসব স্বাভাবিক কাজগুলোতে আনন্দ না পাওয়া, আচরণগত আবেগগত পরিবর্তন অনেক দিন ধরে একইভাবে চলতে থাকলে এবং সেটা দৈনন্দিন কাজকে প্রভাবিত করলে তখন এটিকে বিষণ্নতার লক্ষ্মণ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

 

বিষণ্নতা হতে পারে বিভিন্ন মাত্রার। তার জন্য প্রয়োজন সঠিক মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন যা একজন মনোবিজ্ঞানী করতে পারবেন। বিষণ্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা। শরীরের অন্যান্য রোগের মতো বিষণ্নতাও একটি রোগ। এটাকে অবহেলা করলে জটিলতা আরও বাড়বে। গবেষণায় দেখা যায়, বিষণ্নতায় যারা আক্রান্ত তাঁদের মধ্য ১৫ শতাংশ আত্মহত্যা করতে চায় বা প্রবণতা থাকে। বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে শিশু কিশোরদের ১৮ শতাংশের বেশি বিষণ্নতায় আক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা, ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে বড় সংকট তৈরি করতে যাচ্ছে এই বিষণ্নতা। গবেষকেরা মনে করে সাধারণত প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন তার জীবদ্দশায় কখনো না কখনো বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন বা হতে পারে।

 

বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে মেডিসিন সাইকোথেরাপি দুটোরই প্রয়োজন হয়। ছাড়া প্রতিদিনের কাজকর্ম, খাদ্যাভ্যাস, চিন্তা ভাবনায়ও প্রয়োজন পরিবর্তন। আসুন, জেনে নেই বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে দৈনন্দিন জীবনে নিজেকে কীভাবে সহায়তা করা যায়

 

১। পছন্দের কাজ করা

 সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। যেমন: কোনো নতুন কিছু তৈরি করা, সেটা হতে পারে বাগান করা, গাছ লাগানো, ঘুরতে যাওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, জামা তৈরি করা ইত্যাদি। আপনি আপনার শখের, পছন্দের কাজগুলো করার মাধ্যমে মানসিকতার পরিবর্তন করতে পারবেন। 

 

২। বিরতি নিন

সারা দিনে কাজের বাইরে ৩০/৪০ মিনিট সময় রাখুন যে সময় আপনি পারিপার্শ্বিক কোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না, দেখবেন না, শুনবেন না। শুধুমাত্র নিজের সঙ্গে একান্ত সময় কাটান। প্রয়োজনে নিজের কোনো চিন্তা, আচরণ বা কাজ যদি বিষণ্নতার মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়, সেগুলো কাগজে কলমে লিখে ফেলুন। যেমন: নিজের যত্ন নেওয়া, মেডিটেশন করা, নি:শ্বাস নেওয়া ইত্যাদি। এতে শরীর মনেরও বিশ্রাম হবে।

 

৩। ইতিবাচক চিন্তা করা

বিষণ্নতা থাকলে বিভিন্ন রকম নেতিবাচক চিন্তা মাথায় আসে। যেমন: আমি কিছুই পারি না, আমার মতো দুঃখ কারওও নেই, আমি ব্যর্থ ইত্যাদি। এই সমস্ত চিন্তাগুলোর সত্যতা যাচাই না করে চিন্তা আসা মাত্রই বিশ্বাস করে ফেলবেন না। বিকল্প কোনো চিন্তা বা কাজ বা আচরণের পরিবর্তন বর্তমান পরিস্থিতিকে খারাপের দিকে না যায় সেই দিকে খেয়াল রাখুন। প্রয়োজনে, নিজের সমস্যাগুলো বিশ্বস্ত কারও সঙ্গে ভাগ না করে নেওয়া।

 

৪। ব্যায়াম করা দিনের আলোতে থাকা

গবেষণায় বলে, ব্যায়াম করলে এনডোরফিনের মাত্রা বাড়ে এবং নিউরোট্রান্সমিটারকে উদ্দীপ্ত করে বিষণ্নতা উদ্বিগ্নতা কমায়। সূর্যের আলো ভিটামিন ডি নিঃসৃত করে যা ডোপামিন নিঃসরণ বাড়িয়ে মনকে নিয়ন্ত্রণ করে।

 

৫। মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেওয়া

বিষণ্নতা পুরোপুরি ভালো না হওয়া পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে।

 

উল্লেখিত বিষয়গুলো নিজের ওপর কাজ করলে অবশ্যই একজন পেশাগত মনোবিজ্ঞানীর পরামর্শ নেওয়া উচিত। এখনই লগ ইন করুন মনের বন্ধুর ওয়েবসাইটে। করে ফেলুন নিজের মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন। ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তায় মনের বন্ধু আছে আপনার পাশে। ছাড়া বিষণ্নতা বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ভর্তি হতে পারেন বিষণ্নতার কোর্সে।

ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this