Student packages and discounts ongoing!

ইতিবাচক প্যারেন্টিংয়ের পাঁচটি টিপস

আব্দুল লতিব সম্রাট

POSITIVE PARENTING CHILD DEVELOPMENT PARENTS AND FAMILY

প্যারেন্টিং একটি অসাধারণ যাত্রা। কিন্তু এই যাত্রায় সমস্যা এবং বাধার কোনো অভাব নেই। নিঃসন্দেহে এটি একটি কঠিন কাজ। প্রত্যেক পিতা-মাতাই তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে বড় করার জন্য নিজের সামর্থ্য এবং সক্ষমতা অনুযায়ী সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। তবুও, অনেক সময় এমন কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যা সমাধান করা কঠিন হয়ে পরে। 

 

প্যারেন্টিং একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। 

ধৈর্য নিয়ে শিশুর আবেগ অনুভূতি বোঝা এবং ভালোবাসার মাধ্যমে তাকে বোঝাতে হবে।

 

 

ছবিঃ প্রতিকী                                                                                            সোর্সঃ ফ্রিপিক

 

 

 

আজ এমনই কিছু সাধারণ সমস্যা এবং সেগুলো সমাধানের কৌশল (positive parenting technique) নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করব। যেটাকে ইতিবাচক প্যারেন্টিং পন্থাও বলতে পারেন।

 

শিশুর খাদ্যাভ্যাস

 

অনেক শিশুই আছে যারা স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে চায় না। এটা নিয়ে অভিভাবকেরা অনেক বেশি সমস্যা অনুভব করেন। শিশুর খাবার সময়টাকে আনন্দময় করে তুলতে, তাদের পছন্দের খাবারের সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার মিশিয়ে দিতে পারেন, যাতে তারা খাবার খেয়ে মজা পায়। শিশুকে কখনোই জোর না করে, বরং ধৈর্য ধরে খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। খাওয়ার সময় আপনার শিশুকে স্মার্ট ফোন বা ট্যাব জাতীয় যন্ত্র ব্যবহারে অভ্যস্ত করলে পরবর্তীতে নেতিবাচক আচরণগত সমস্যা মোকাবিলা করতে হতে পারে। 

 

ঘুমের সমস্যা

 

শিশুদের ঘুম নিয়ে অনেক পিতামাতার মধ্যে বড় ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করে। আপনার শিশুর ঘুমের জন্য একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করে দিন। প্রতিরাতে একই সময়ে শুতে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে তাকে সহায়তা করুন। ঘুমানোর আগে বৈদ্যুতিক যন্ত্র যেমন-মোবাইল ফোন, ট্যাব বা টিভি থেকে দূরে রাখতে গল্প বলা বা গান শোনানো যেতে পারে। 

 

মুড সুইং এবং আচরণগত সমস্যা 

 

শিশুরা প্রায়ই আচরণগত সমস্যার সম্মুখীন হয়। এর ফলে অনেক সময় অভিভাবকদের বিভিন্ন জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। আমরা অনেক সময় সন্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি না করেই তাদের আচরণ সঠিক করার চেষ্টা করি। আপনার সন্তান এবং আপনার মধ্যে যদি কোনো সম্পর্ক না থাকে, তবে সে আপনার কথা মানতে চাইবে না। তাই যে কোনো বিষয়ে সন্তানের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলুন। তাদের অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করুন এবং সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করুন। ইতিবাচকভাবে জোরপূর্বক যেমন- তুমি যদি এই খাবারটা খাও, তাহলে তোমাকে ঘোরাতে নিয়ে যাব বলতে পারেন। তবে শিশুকে কখনোই মিথ্যা আশ্বাস দেওয়া যাবে না। 

 

পড়াশোনায় আগ্রহের অভাব

 

আমাদের মধ্যে অনেক শিশু স্কুলে যেতে চায় না বা পড়াশোনায় আগ্রহ দেখায় না। এর ফলে একাডেমিক পড়াশোনায় ক্ষতি হয়ে থাকে। আপনি যদি পড়াশোনাকে শিশুর সামনে মজাদার কোনো কাজ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন, তবে সে পড়াশোনায় ধীরে ধীরে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারে। এ ক্ষেত্রে আপনি শিক্ষামূলক খেলনা, গেম এবং অ্যাপ ব্যবহার করার মাধ্যমে মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারেন। এ ছাড়া শিশুর আগ্রহের বিষয় খুঁজে বের করে সেগুলোতে মনোযোগ দিন। তার কাজের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দিন এবং প্রশংসা করুন। তবে অন্যের সঙ্গে তুলনা বা তিরস্কার করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। 

 

স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ

 

শিশুরা বৈদ্যুতিক যন্ত্রের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর এটি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। শিশুর স্ক্রিন টাইমের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে পারেন। শিশুদের বাইরে বা মাঠে খেলাধুলা এবং শারীরিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিন। তাদের সঙ্গে সময় কাটান এবং এমন কার্যক্রমে যুক্ত করুন যা স্ক্রিনবিহীন বিনোদন প্রদান করে। 

 

 

প্যারেন্টিং একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। ধৈর্য নিয়ে শিশুর আবেগ অনুভূতি বোঝা এবং ভালোবাসার মাধ্যমে তাকে বোঝাতে হবে। আমরা যদি ইতিবাচক প্যারেন্টিং এর কৌশলগুলো গ্রহণ করার মাধ্যমে আমাদের সন্তানদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারি, তবে যে কোনো সমস্যা সমাধান করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। সন্তানের সঙ্গে একটি সুন্দর ও মজার সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যাতে তারা একদিন একজন সফল ও সুখী মানুষ হতে পারে। 

ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this

BLOG

“ ভাল্লাগে না, মন খারাপ ” এগুলো কি শুধুই অনুভূতি নাকি কোনো মানসিক রোগ?

জানালার পর্দার ফাঁকে আলো আসছে, মুখরিত চারদিকে সবুজের সমারোহ, পাখির কিচিরমিচির, সূর্যের আলোতে ঝলমল চারদিক—   এমন একটা দিনেও কারও কারও লাগতে পারে অন্ধকার। এত কিছুর মাঝে জীবনের আনন্দ যেন বিলীন

BLOG

কেয়ার গিভারের / যত্নকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন

কোনো না কোনো ভাবে প্রতি মুহূর্তেই আমরা যত্ন পেয়ে থাকি। মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন তো আছেই। আবার এমন কিছু মানুষের যত্নে ভালো থাকি যারা পেশাগত কারণে সরাসরি যত্ন বা সেবা দানের সঙ্গে জড়িত, যেমন - নার্স, ব

BLOG

উদ্বেগ কী, কারণ ও প্রতিকার

আমরা যখন কোনো পরিস্থিতিতে অস্বস্তি অনুভব করি, ভয় পেয়ে যাই, কী করব বুঝে উঠতে পারি না, সেই অনুভূতিকে উদ্বেগ বলে। এটি খুব সাধারণ একটা আবেগ। তবে অতি মাত্রায় কারও মধ্যে দেখা দিলে উদ্বেগজনিত মানসিক অসুবিধা

BLOG

‘প্রোক্র্যাস্টিনেট’ না করে ইতিবাচক হই

আমরা অনেকেই প্রোক্র্যাস্টিনেশন বা গড়িমসির ফলে বছরের শুরুতে আমাদের নির্ধারিত লক্ষ্যগুলো পূরণ করতে পারি না। এতে মনে এক রকম নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আমরা আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। লক্ষ্য পূরণের দৃঢ় মনোভাবটা আ