Student packages and discounts ongoing!

কীভাবে সহমর্মী শ্রোতা হব?

জাহিন যাঈমাহ্ কবির

ACTIVE LISTENER TIPS & TRICKS SUPPORT

এই তো সেদিনই প্রিয় বন্ধুকে বলছিলাম কেন ইদানিং কাজে আগ্রহ পাচ্ছি না। উত্তরে সে আমাকে অনেকটা থামিয়ে দিয়েই শুরু করলো নিজের সমস্যার কথা। মনে হলো, আমার সমস্যাটা যেন তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না। মন খারাপ হলো, খানিকটা একাও লাগলো। এমন ব্যস্ত পৃথিবীতে কি সত্যিই আমাদের কথা সহমর্মী হৃদয় দিয়ে শোনার মতো কেউ আছে? এসব ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ উপলব্ধি করলাম, আমরা সারাদিন অনেক কথাই বলি, অনেক কিছুই শুনি। কিন্তু ‘সহমর্মী’ হতে পারি না বলে হয়তো আমাদের সেই যোগাযোগটুকু বিফলে যায়। আমরা প্রিয় বন্ধুর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়াতে পারি না, পরিবারের কারো বিষন্নতার সময়ে সঙ্গী হতে পারি না এই সহমর্মীতার অভাবেই তো!

তাই মনের বন্ধু’র হয়ে আজ লিখছি কীভাবে হবেন সহমর্মী শ্রোতা।

"আমরা অনেক সময় সামনে থাকা মানুষটির কথা থামিয়ে দিয়ে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যাই। এ অভ্যাসটিও একজন সহমর্মী শ্রোতা হবার পথে বাধা।"

আগে শুনব, পরে বলব

কেউ যখন তার ব্যক্তিগত কোন সমস্যা কিংবা অনুভূতির কথা আপনাকে বলতে আসে, তার অর্থ হলো সেই মূহুর্তে তার কাছে আপনি নির্ভরযোগ্য একজন মানুষ। এই ভরসার জায়গাটা ধরে রাখতে প্রথমেই ধৈর্য্যের সাথে তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। তার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করুন। আগেই কথা না বলে তাকে পুরোটা বলার সুযোগ দিন। শোনার পর আপনি জিজ্ঞেস করুন সে এখন কী করতে চায়, এবং আপনি কীভাবে তার পাশে থেকে তাকে সহযোগিতা করতে পারেন। এতে সমস্যা যতই গুরুতর হোক না কেন, তার ভীতি কিছুটা হলেও কমবে, সেই সাথে সাহস এবং আস্থার জায়গাও বৃদ্ধি পাবে।

গল্প তার, আমার নয়

সহমর্মী শ্রোতা হওয়ার ক্ষেত্রে সামনের মানুষটিকে প্রাধান্য দেয়া খুবই জরুরী। বারবার অন্যমনস্ক হওয়া, আপনার ব্যস্ততার কথা বলা তাকে নিজের কথা বলতে নিরুৎসাহিত করবে। আমরা অনেক সময় সামনে থাকা মানুষটির কথা থামিয়ে দিয়ে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যাই। এ অভ্যাসটিও একজন সহমর্মী শ্রোতা হবার পথে বাধা। আপনার কথার মাধ্যমে তাকে বোঝাতে হবে তার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিগুলো নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। এই আশ্বাস জীবন সম্পর্কে তার ইতিবাচক ভাবনা ফিরিয়ে দেবে।

অনুভূতির সুরক্ষা করা আমার দায়িত্ব

বক্তা যেহেতু বিশ্বাসের জায়গা থেকে তার কথাগুলো আপনার সাথে ভাগাভাগি করছে, তাই আপনারও দায়িত্ব হবে মুক্ত মনে, বিচারহীন ভাবে তার কথা শোনা এবং তাকেও তেমনটিই অনুভব করানো। তাকে আশ্বাস দিয়ে বলুন যে, তার অনুভূতিগুলো, কথাগুলো আপনার কাছে নিরাপদ। তার ব্যক্তিগত তথ্য যে অন্য কারও কাছে পৌঁছাবে না সে নিশ্চয়তা দেয়াও একজন সহমর্মী শ্রোতার দায়িত্ব।

একজন ভালো শ্রোতা কখনোই বক্তাকে নিয়ন্ত্রণ করেন না, তাকে ছোট বা অবহেলিত অনুভব করেন না। বরঙ সহানুভূতিশীল আচরণের মাধ্যমে তারা এমন একটি জায়গা তৈরি করেন, যেখানে প্রাণ খুলে নিজের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতার কথা বলা যায়। আমাদের রোজকায় ব্যস্ত জীবনে এমন সহমর্মী শ্রোতার উপস্থিতি ভীষণ প্রয়োজন!

ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this

BLOG

Unveiling the Silent Struggles of Men: A Journey through Mental Health Challenges

In the bustling streets of Bangladesh, amidst the vibrant culture and rich traditions, lies a silent struggle that often goes unnoticed—the mental health challenges faced by Bangladeshi men. While the

BLOG

কেন আমরা কাজ ফেলে রাখি?

রুমের কোণায় পড়ে থাকা চেয়ারটিতে কাপড়ের স্তুপ জমে জমে ছোটোখাটো একটা এভারেস্ট হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন একদম চলেই এসেছে, তবু এখনো শুরু করতে পারছি না। প্রায় প্রতিদিন যা করে এসেছি, যা আমার ন

BLOG

মেডিটেশন কি সত্যিই জরুরি?

দিনের যে কোনো একটি নির্দিষ্ট সময় আপনি মেডিটেশন করবার জন্য বেছে নিতে পারেন। হতে পারে তা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর, অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। আবার অনেক সময় কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করেও মেডিটেশন অনুশীলন

BLOG

ছুটির দিনে মনের যত্ন: কেন, কীভাবে?

এই ব্যস্ত নাগরিক জীবনে ‘ছুটি’ মানে মুক্তি, আনন্দ, বিশ্রাম! ছুটি শুনলেই মন ছুট লাগাতে চায় দূর তেপান্তরে! তবে অনেক সময়ই দেখা যায় ছুটির দিনেও ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে দাওয়াতে, আপ্যায়নে, সামাজিকতায় আর আতিথেয়তায়