Student packages and discounts ongoing!

উদ্বেগ কী, কারণ ও প্রতিকার

নাবিলা আজাদ

ANXIETY TIPS & TRICKS SUPPORT

আমরা যখন কোনো পরিস্থিতিতে অস্বস্তি অনুভব করি, ভয় পেয়ে যাই, কী করব বুঝে উঠতে পারি না, সেই অনুভূতিকে উদ্বেগ বলে। এটি খুব সাধারণ একটা আবেগ। তবে অতি মাত্রায় কারও মধ্যে দেখা দিলে উদ্বেগজনিত মানসিক অসুবিধা হিসেবেই এটিকে ধরে নিতে হবে। উদ্বেগ বিভিন্ন কারণে তৈরি হতে পারে। আজকে আমরা জানব উদ্বেগের কারণগুলো।

img1

উদ্বেগের কারণ

বায়োলজিক্যাল কারণ

জন্মসূত্রে পাওয়া ডিএনএর মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগ থাকতে পারে। বংশের মধ্যে কারও মধ্যে আগে থেকে উদ্বেগ থাকলে, সেই বৈশিষ্ট্য উত্তরাধিকার সূত্রে ব্যক্তির মধ্যে চলে আসতে পারে।

মানসিক আঘাত বা ট্রমা

শৈশবের কোনো দুর্ঘটনা, শোষণ বা নির্যাতনের ঘটনা, যুদ্ধ, সহিংসতা বা জীবনের যে কোনো সময়ে পাওয়া আকস্মিক বা ধারাবাহিক মানসিক আঘাত উদ্বেগ তৈরি করতে পারে।

দীর্ঘকালীন চিকিৎসা

ব্যক্তি কোনো কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নিয়ে থাকলে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করার পর ব্যক্তির মধ্যে উদ্বেগজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ব্যক্তিত্বের বিকাশ

জন্মগত জটিলতা বা জন্মের পর বেড়ে ওঠার নানা ক্ষেত্রে সঠিক বিকাশ না হলে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। অন্যান্য মানসিক অসুস্থতা। ব্যক্তি যদি অন্য কোনো মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে, যেমন: বিষণ্নতা, ওসিডি ইত্যাদি থেকেও উদ্বেগের সৃষ্টি হতে পারে।

মাদক সেবন

অতিরিক্ত মাদক সেবন থেকে এই রোগ হওয়া খুবই স্বাভাবিক।

কিছু বিশেষ ভীতি

কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তি কোনো কারণ ছাড়াই ভয় পান। যেমন কেউ উচ্চতায় ভয় পান, কেউ বদ্ধ স্থানে ভয় পান, কেউ সামাজিকতায় ভয় পান। এগুলো থেকেও উদ্বেগজনিত সমস্যা তৈরি হতে পারে।

লালনপালনজনিত সমস্যা

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ, পারিবারিক কলহ, অতিরিক্ত শাসন, সন্তানের প্রতি বেশি প্রত্যাশা শিশুর বিকাশে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। শিশুর মধ্যে নানা রকম জটিলতা তৈরি হতে পারে, এমনকি শিশু বিভিন্ন ধরনের মানসিক অসুবিধায় পড়তে পারে যার মধ্যে উদ্বেগ অন্যতম।

সামাজিক প্রত্যাশা

বর্তমানে একটি শিশুর ওপর তার পরিবার ও সমাজের অনেক প্রত্যাশা থাকে। সামাজিক ও পারিবারিক প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারলে শিশুর মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হতে দেখা যায়।

উদ্বেগের প্রতিকার

নিজের সঙ্গে কথা বলা

উদ্বেগের সময় নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলা ভালো একটি উপায়। নিজেকে শান্ত রাখতে " তুমি পারবে, ভয় নেই" এই ধরনের কথা খুব ভালো কাজ করে।

img

পরিমিত ঘুম

উঘুম আমাদের শরীরকে সতেজ রাখতে সহায়তা করে। উদ্বেগ কমানোর জন্য ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করতে হবে। নিয়মিত সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো মানসিক উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে থাকে।

নিয়মিত খাবার গ্রহণ

আমরা যখন উদ্বেগবোধ করি, তখন আমাদের মধ্যে খাবারের প্রতি অনীহা কাজ করতে পারে। মনে রাখতে হবে, খাবার না খেলে সমস্যাগুলো কমে যাবে না, বরং খাবার আমাদের শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে। উদ্বেগ দূর করার পদক্ষেপগুলো নিতে সহায়তা করবে। এ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

নেতিবাচক চিন্তা এড়িয়ে চলা

খারাপ চিন্তা সব সময় এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। তবে চেষ্টা করতে হবে ইতিবাচক চিন্তা করতে। ভাবতে হবে যা চাইছি তা ইতিবাচকভাবেই পাব। এটা আমাদের উদ্বেগ দূর করতে সহায়তা করবে।

পছন্দের কাজগুলো করা

আমাদের সবারই পছন্দের কিছু কাজ থাকে। কেউ বই পড়তে, কেউ গান করতে আবার কেউবা ছবি আঁকতে ভালোবাসি। উদ্বেগের সময় আমাদের পছন্দের কাজগুলো করা উচিত।

পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো

পরিবার আমাদের সবচেয়ে কাছের জায়গা। আমাদের সবচেয়ে বেশি সময় সেখানেই কাটে। উদ্বেগের সময় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটালে আমাদের ভালো লাগা কাজ করে, উদ্বেগও কম অনুভূত হবে।

নিয়মিত ব্যায়াম করা

মানসিক চাপ তৈরি করে যে হরমোন, ব্যায়াম করলে সেটা কমে যায়। বেড়ে যায় এনডোরফিন হরমোনের মাত্রা, যা উদ্বেগ কমাতে সহায়তা করে।

নিশ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম

উদ্বেগের সময় আমরা নিশ্বাস প্রশ্বাস এর ব্যায়াম করতে পারি। নাক দিয়ে নিশ্বাস নিয়ে অল্প কিছুক্ষণ আটকে রেখে মুখ দিয়ে ছেড়ে দিতে হবে। এ ছাড়া ১০০ থেকে ০ পর্যন্ত নিম্নক্রম অনুসারে গণনা করতে পারি। যেমন ১০০,৯৯, ৯৮,৯৭ …।

কাউন্সেলিং নেওয়া

উদ্বেগ কমানোর জন্য প্রয়োজনে আমরা কাউন্সেলিং নিতে পারি। একজন দক্ষ কাউন্সিলর উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করতে পারেন।

img
ব্লগটি মনের বন্ধু এক্সপার্ট দ্বারা রিভিউয়ের পরে প্রকাশিত

এই ব্লগের একমাত্র উদ্দেশ্য মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা। পাঠকের বোঝার সুবিধার্থে এতে কিছু প্রতীকি ঘটনা ব্যবহার করা হয়েছে।

এই ব্লগ বা এর কোনো অংশ পড়ে কেউ আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার জন্য লেখক ও ‘মনের বন্ধু’ দায়ী নয়। মনের ওপর চাপ অনুভব করলে বা মানসিকভাবে ট্রিগার্ড অনুভব করলে দ্রুত মনের বন্ধু বা যেকোনো মানসিক স্বাস্থ্যবিদের সাথে যোগাযোগ করুন।

মনের বন্ধুতে কাউন্সেলিং নিতে যোগাযোগ করুন: ০১৭৭৬৬৩২৩৪৪।

📍: ৮ম ও ৯ম তলা, ২/১৬, ব্লক-বি, লালমাটিয়া, ঢাকা

You might also like this

BLOG

কীভাবে সহমর্মী শ্রোতা হব?

আমরা অনেক সময় সামনে থাকা মানুষটির কথা থামিয়ে দিয়ে, তাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে যাই। এ অভ্যাসটিও একজন সহমর্মী শ্রোতা হবার পথে বাধা।

BLOG

Unveiling the Silent Struggles of Men: A Journey through Mental Health Challenges

In the bustling streets of Bangladesh, amidst the vibrant culture and rich traditions, lies a silent struggle that often goes unnoticed—the mental health challenges faced by Bangladeshi men. While the

BLOG

কেন আমরা কাজ ফেলে রাখি?

রুমের কোণায় পড়ে থাকা চেয়ারটিতে কাপড়ের স্তুপ জমে জমে ছোটোখাটো একটা এভারেস্ট হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন একদম চলেই এসেছে, তবু এখনো শুরু করতে পারছি না। প্রায় প্রতিদিন যা করে এসেছি, যা আমার ন

BLOG

মেডিটেশন কি সত্যিই জরুরি?

দিনের যে কোনো একটি নির্দিষ্ট সময় আপনি মেডিটেশন করবার জন্য বেছে নিতে পারেন। হতে পারে তা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর, অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে। আবার অনেক সময় কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করেও মেডিটেশন অনুশীলন